top of page

সতীদাহ প্রথা

  • Writer: Debjoyti Ghosh
    Debjoyti Ghosh
  • Jun 26
  • 2 min read
স্বামীর শবদেহের সাথে সতীর দহন
স্বামীর শবদেহের সাথে সতীর দহন

সতীদাহ প্রথা যা এক কুপ্রথা কারণ কোনোদিনও কোথাও উল্লেখ নেই যে বিধবাদের তার স্বামীর মৃত্যুর সাথে দাহ হতে হবে। তবুও গিয়েছে অনেক প্রাণ, নষ্ট হয়েছে সংসার, শেষ হয়েছে অনেক সদ্য বিধবা, নষ্ট হয়েছে গর্ভবতী মহিলা।

Women in traditional attire surrounded by flames on the left; a woman holding a coconut, wearing red and gold on the right. Fiery and serene mood.

কি এই সতীদাহ প্রথা?

দেবী সতী যখন মহাদেবকে বিয়ে করেন তখন দেবী সতীর পিতা তাঁকে তাঁর স্বামীর নামে অপমান করেন—যে তিনি এক শ্মশানবাসীর সাথে বিবাহ করেছেন। এই অপমান সহ্য না করে দেবী সতী যজ্ঞের আগুনে নিজেকে জীবন্ত দাহ করতে গিয়েছিলেন। সেই থেকেই উঁচু জাতির হিন্দুরা বা ব্রাহ্মণেরা পুরাণ মতে স্ত্রীদের অনিচ্ছায় জীবন্ত দাহ করত। অথচ কোথাও লেখা নেই যে স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে সহ-দাহ হতে হবে। এমনকি অথর্ববেদে আছে যে স্ত্রী তার স্বামীর মৃত্যুর পর পুনরায় বিবাহ করতে পারে।

A woman in a red sari sits on a funeral pyre surrounded by people, some holding swords. Flames rise, creating an intense scene.

কিভাবে পালন হতো বা মান্য করা হতো এই প্রথা?

গ্রামেগঞ্জে ঢোল-ডঙ্কার শব্দ শুনলেই বোঝা যেত কারও দাহকার্য চলছে।স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে নতুন সাজে সাজিয়ে, আলতা, সিঁদুর, চন্দন পরিয়ে স্বামীর সাথে চিতায় বসানো হতো।যখন স্ত্রী গরম সহ্য না করে উঠে আসতে চাইতেন, তখন গ্রামের মানুষ লাঠি দিয়ে তাকিয়ে জোর করে বসিয়ে রাখত এবং ডোল বাজিয়ে চিৎকার করত যাতে তার মৃত্যুর চিৎকার কেউ না শুনতে পায়।


রাজা রামমোহন রায়
রাজা রামমোহন রায়

জ্বলন্ত সংকল্প: রাজা রামমোহন রায় ও সতীদাহ প্রথার বিলুপ্তি

ভারতীয় ইতিহাসের পাতায় খুব কম নামই রাজা রামমোহন রায়-এর মতো উজ্জ্বলভাবে জ্বলজ্বল করে।উনিশ শতকের একজন মহীরূহ ব্যক্তিত্ব, তিনি ছিলেন একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী—একজন সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাবিদ এবং প্রকৃত দূরদর্শী মানুষ। তিনি তাঁর সময়ের গভীরভাবে প্রোথিত প্রথাগুলিকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস করেছিলেন।

তাঁর অনেক সাহসী কাজের মধ্যে, একটি ছিল মানবিক কারণে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য: সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রাম।

এমন একটি সমাজ কল্পনা করুন যেখানে একজন শোকাহত বিধবাকে, প্রায়শই তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে, মৃত স্বামীর চিতায় সহমরণে বাধ্য করা হতো। এটাই ছিল সতীদাহের ভয়াবহ বাস্তবতা, যা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শত শত বছর ধরে বিভিন্ন রূপে প্রচলিত ছিল।

ধর্মীয় ব্যাখ্যা, সামাজিক চাপ ও পিতৃতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণের জটিল মিশ্রণে এটি মানব মর্যাদার এক গভীর লঙ্ঘন ছিল।


পরিবর্তনের অনুঘটক: ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানালোক

সতীদাহের বিরুদ্ধে রামমোহন রায়ের যুদ্ধ কেবল একাডেমিক সাধনা ছিল না; এটি ছিল গভীরভাবে ব্যক্তিগত।মনে করা হয়, তিনি তাঁর নিজের ভ্রাতৃবধূর সহমরণ দেখেছিলেন—একটি মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা যা তাঁর বিবেককে নাড়িয়ে দেয়।

এই ব্যক্তিগত যন্ত্রণা, হিন্দু শাস্ত্র সম্পর্কে গভীর জ্ঞান এবং পাশ্চাত্য উদার চিন্তার সাথে পরিচয়—এই সবকিছু তাঁর সংকল্পকে আরও দৃঢ় করেছিল।তিনি জোর দিয়ে বলেন, সতীদাহ হিন্দু ধর্মগ্রন্থ (বেদ ও উপনিষদ)-এ অনুমোদিত নয়—এটি পরবর্তীকালে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল দ্বারা যুক্ত হয়েছে।

Comments


bottom of page