Dr. Bidhan Chandra Roy:পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী যার হাতে গড়ে উঠেছে আজকের আধুনিক বাংলা তাঁর নাম ডঃ বিধানচন্দ্র রায়
- an Author
- Jul 1
- 2 min read

Dr. Bidhan Chandra Roy :যার হাতে গড়ে উঠেছে আজকের আধুনিক বাংলা তাঁর নাম ডঃ বিধানচন্দ্র রায়।ডঃ বিধানচন্দ্র রায় ছিলেন এমন এক মানুষ, যিনি চিকিৎসা, শিক্ষা ও রাজনীতিকে মিলিয়ে গড়েছেন এক অনন্য জীবনের পথচলা। তিনি শুধু এক জন শ্রেষ্ঠ চিকিৎসকই ছিলেন না, ছিলেন এক দক্ষ প্রশাসক ও সমাজসেবক।আজ, পয়লা জুলাই, পশ্চিমবঙ্গ এবং প্রকৃতপক্ষে ভারতের ইতিহাসে এক অত্যন্ত অনুপ্রেরণামূলক দিন! আমরা আজ স্মরণ করছি এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, ডঃ বিধানচন্দ্র রায়কে—যিনি কেবল একজন সুবিখ্যাত চিকিৎসকই ছিলেন না, বরং একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক, একজন স্বপ্নদ্রষ্টা নির্মাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রীও বটে। দেশের প্রতি গভীর ও অসামান্য অবদান এতটাই তাৎপর্যপূর্ণ যে Dr. Bidhan Chandra Roy এরজন্মদিনটি ভারতে জাতীয় চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালিত হয়। এটি সত্যিই এক উপযুক্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি একজন মহান মানুষের প্রতি, যিনি নিজের জীবনকে ব্যক্তি এবং রাজ্য উভয়ের আরোগ্য সাধনে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করেছিলেন, যা আমাদের আজও অনুপ্রাণিত করে।
১৮৮২ সালে বিহারের পাটনায় জন্মগ্রহণকারী বিধানচন্দ্র রায়ের জীবন শুরু থেকেই মেধাবী ছিলেন।তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে গণিতে স্নাতক শেষ করে অসাধারণ নিষ্ঠার সাথে চিকিৎসা শিক্ষা গ্রহণ করেন, কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন এবং তারপর রেকর্ড দুই বছর তিন মাসে এমআরসিপি (লন্ডন) এবং এফআরসিএস (ইংল্যান্ড) উভয়ই অর্জন করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেন।
একজন প্রকৃত দেশপ্রেমী ও সমাজ সেবক হিসেবে ভারতে ফিরে এসে ডাক্তারি পেশায় যোগ দেন।তিনি তার অবিশ্বাস্য রোগ নির্ণয়ের দক্ষতার জন্য পরিচিত ছিলেন, প্রায়শই কেবল রোগীকে পর্যবেক্ষণ করেই তার অসুস্থতা অনুমান করতে পারতেন।কিন্তু তিনি ডাক্তার ছিলেন না শুধুই রোগ নিরাময়ের জন্য, ছিলেন দরিদ্র ও অসহায় মানুষের নির্ভরতার প্রতীক।অনেক দরিদ্র ও অসহায় মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা করতেন, কারণ তাঁর কাছে মানুষ ছিল সবার ওপরে।
সমাজ কল্যাণের স্বার্থে ১৯৪৮ সালে ডঃ বিধানচন্দ্র রায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।দেশ স্বাধীনের কিছু সময়েই নবগঠিত রাজ্যের ভার নিয়ে ছিল তার জন্য যতীন এবং ঝুঁকি পূর্ণ।সেই সময় বাংলা বিভাজন,প্রচুর পরিমানে উদ্বাস্তু মানুষের আগমন এবং ব্যাপক দুর্বল অর্থনীতির মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি।
তাঁর শাসনকালে কলকাতা ও আশেপাশের এলাকায় আধুনিক নগরায়ণের সূচনা হয়—বিধাননগর (সাল্টলেক), দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট,কল্যাণী (একটি পরিকল্পিত শহর),কালীঘাট সেতু প্রভৃতি তাঁর পরিকল্পনার ফল।সময়ের সম্মুখীন হয়ে পরবর্তী ১৪ বছর রাজ্যের ভার নিজের কাঁধ এ তুলে নিয়ে ছিলেন তিনি।স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় ডঃ বিধানচন্দ্র রাইয়ের ভূমিকা।সেই সময় কালে তার প্রচেষ্টা তাই বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতাল গড়ে তোলেন যেগুলি হলো-চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতাল,সেবাসদন হাসপাতাল,SSKM হাসপাতাল (PG হাসপাতাল),ESIC হাসপাতাল (জোকা)।বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তার কৃষি উন্নয়নের স্বপ্নের একটি প্রমাণ।তার দূরদর্শী পরিকল্পনা পশ্চিমবঙ্গকে তার প্রাথমিক অস্থির বছরগুলি পেরিয়ে অগ্রগতির পথে চালিত করতে সাহায্য করেছিল।কথা কম কাজ বেশি তে বিস্বাশী ছিলেন Dr. Bidhan Chandra Roy ।তার রাজনৈতিক কর্মজীবনের ব্যস্ততা সত্ত্বেও, তিনি তার চিকিৎসা পেশা পুরোপুরি ত্যাগ করেননি, প্রায়শই গভীর রাত পর্যন্ত রোগীদের দেখতেন।
১৯৬১ সালে ডা: বিধান চন্দ্র রায় ভারত রত্ন দেশের সর্বোচ্চ্য বেসামরিক সম্মানে সম্মানিত হন ।১৯৬২ সালের ১লা জুলাই, তার ৮০তম জন্মদিনে, ডঃ বিধানচন্দ্র রায় পরলোকগমন করেন, রেখে চলে যান নিঃস্বার্থ সেবা।তাঁর জন্মদিনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ এ যেন এক জীবনচক্রের পূর্ণতা।তার জীবন একটি অনুপ্রেরণামূলক উদাহরণ হিসেবে কাজ করে যে কীভাবে একজন ব্যক্তি, মেধা, নিষ্ঠা এবং একটি সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে এবং একটি রাজ্যের ভাগ্যকে আকার দিতে পারেন।ডঃ বিধানচন্দ্র রাইয়ের জন্মদিন ১ জুলাই আজও আমরা পালন করি জাতীয় চিকিৎসক দিবস হিসেবে।
ডঃ বিধানচন্দ্র রায় ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন মানুষের জন্য। তাঁর আদর্শ, তাঁর কাজ এবং মানবিক মনোভাব আমাদের আজও পথ দেখায়।তিনি শুধুই বাংলার নয়,সারা ভারতের মানুষ কে পথ দেখায় এক উজ্জ্বল ভব্যিষৎ এর দিক এ।










Comments