MOTHER EARTH(মা ধরিত্রী):সংকটের মুখে পৃথিবী 🌍
- an Author
- Jun 28
- 3 min read
Updated: Jun 29
পৃথিবী, এই নীল সবুজ গ্রহটি শুধুমাত্র একটি বৈজ্ঞানিক বস্তু নয় এটি আমাদের সকলের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু।এটি আমাদের প্রথম আশ্রয় প্রথম ঘর যেখানে কোটি কোটি প্রাণী উদ্ভিদ এবং মানুষ একসঙ্গে সহাবস্থান করছে।এখন পর্যন্ত আমরা যতদূর জানি, মহাবিশ্বে পৃথিবীই একমাত্র জ্যোতির্বিজ্ঞানের বস্তু যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব নিশ্চিত। এর কারণ হলো এখানে তরল পানি, একটি উপযুক্ত বায়ুমণ্ডল এবং সূর্য থেকে আদর্শ দূরত্ব রয়েছে।"পৃথিবী" নামটি কমপক্ষে ১,০০০ বছর পুরনো এবং এটি প্রাচীন ইংরেজি ও জার্মান শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ "ভূমি"। এটি আমাদের সৌরজগতের অন্য গ্রহগুলোর মধ্যে অনন্য, কারণ এর নামকরণ কোনো গ্রিক বা রোমান দেবতার নামে করা হয়নি।পৃথিবী আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে ঘন গ্রহ।

পৃথিবীর পরিচিতি:পৃথিবী আমাদের সৌরজগতের তৃতীয় গ্রহ।এটি সূর্য থেকে প্রায় ১৫কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পৃথিবী ৭০% জল আর ৩০% স্থলভাগে আবৃত।
পৃথিবীর আনুমানিক বয়স- ৪৫৪ কোটি বছর
পৃথিবীর আয়তন -১০৮৩ কোটি ঘন কিমি
পৃষ্ঠভাগের আয়তন -৫১কোটি বর্গ কিমি
স্থলভাগের আয়তন-১৫ কোটি বর্গ মিটার
জলভাগ -৩৬ কোটি বর্গ কিমি
গড় ব্যাসার্ধ -৬৩৭১ কিমি
প্রকৃতির কোলে জন্ম নেওয়া আমাদের জীবনযাত্রা সম্পূর্ণভাবে এই Mother Earth এর ওপর নির্ভরশীল।আমরা পৃথিবীকে মা কেন বলি? কারণ পৃথিবী আমাদের জন্য বুক চিরে পুষ্টিকর খাদ্য শস্য, জলবায়ু এবং আশ্রয় প্রদান করে থাকে। আমাদের সভ্যতা গড়ে উঠেছে তার বুকের উপর । কিন্তু আমরা কি সত্যিই তার প্রতি আমাদের কর্তব্য পালন করছি?
পাহাড় নদী বন এবং প্রাণীকুল এরা প্রত্যেকেই পৃথিবী মা এর অঙ্গ,যখন আমরা নির্বিচারে গাছ কাটছি নদী দূষণ করছি বা বনভূমি উজাড় করছি তখন প্রকৃতির কন্ঠস্বর যেন করুন ভাবে চিৎকার করে ওঠে। জলবায়ু পরিবর্তন উষ্ণায়ন প্রকৃতির দুর্যোগ সব আমাদের কর্মফল। পরিবেশ দূষণে প্রাণীকুল হারাচ্ছে তাদের অস্তিত্ব। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। মা ধরিত্রীকে বাঁচাতে হলে আমাদের সচেতন হতে হবে।

আপনি কি জানেন?
১৯০০ শতক এ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ছিল প্রায় ১৩.৬°সেলসিয়াস যা বর্তমান এ ২০২৫ এ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫°সেলসিয়াস।
আমাদের করণীয়:
গাছ লাগানো: প্রতি বছর অন্তত একটি গাছ লাগান
প্লাস্টিক বর্জন: একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক এড়িয়ে চলুন
জল সংরক্ষণ: অপ্রয়োজনীয় জলের অপচয় বন্ধ করুন
বিদ্যুৎ অপচয় : বন্ধ করতে হবে।
মা ধরিত্রী বা মাদার আর্থ আমাদের কিছুই চায় না শুধু একটু যত্ন একটু ভালোবাসা তাকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব কারন তার সুরক্ষায় আমাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করে আসুন আমরা সকলে মিলে শপথ করি মা পৃথিবীর জন্য কিছু করব প্রকৃতিকে ভালোবাসবো তার সুরক্ষা করব। আমাদের ছোট উদ্যোগী হতে পারে বড় পরিবর্তনের শুরু।
মা পৃথিবী দিবস ( MOTHER EARTH DAY ) :
পৃথিবী আমাদের আশ্রয় যাকে আমরা ভালোবেসে মা বলি তারই প্রতি সম্মান জানাতে প্রতিবছর বাইশে এপ্রিল বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় মা পৃথিবী দিবস বা Earth Day। প্রথম উদযাপন করা হয় ১৯৭০ সালে ২২ শে এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে,এই আন্দোলনের সূচনা করেন Gaylord Nelson, একজন মার্কিন সিনেটর। তার উদ্দেশ্য ছিল পরিবেশ দূষণ নিয়ে সাধারণ মানুষ ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। ধীরে ধীরে এটি একটি আন্তর্জাতিক আন্দোলনের রূপ নেয় ।আজ বিশ্বের প্রায় ১৯৩ টি দেশে এই দিবস পালিত হয় কোটি কোটি মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
বর্তমানে পৃথিবী দিবসের গুরুত্ব:
এই দিনটি শুধুমাত্র একটি দিবস নয় এটি একটি বার্তা ,একটি আন্দোলন, একটি শপথ পৃথিবীকে রক্ষা করার শপথ। এই দিনে বিশ্বজুড়ে নানা রকম কর্মসূচি পালন করা হয় যেমন গাছ রোপন অভিযান রাস্তাঘাট পরিষ্কার অভিযান স্কুল-কলেজে সচেতনতামূলক সভা পরিবেশবান্ধব প্রকল্প উদ্বোধন পরিবেশ সংরক্ষণ শপথ।
বর্তমানে পৃথিবী নানা ধরনের পরিবেশগত সংকটে পড়ছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং
মেরু অঞ্চলে বরফ গলছে
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে
বনভূমি হ্রাস পাচ্ছে
বায়ু ও জল দূষণ বেড়ে চলেছে
প্লাস্টিক দূষণে জলজ প্রাণীরা হুমকির মুখে।
আর এই সবকিছুর জন্য আমরাই দায়ী। আমাদেরকে সচেতন হয়ে উঠতে হবে মা পৃথিবীর কথা ভাবতে হবে, মা পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে।
প্রতিটা দিন পৃথিবী দিবস পালন করতে হবে।

আমরা খুব সহজেই পৃথিবীর দিবসে অংশ নিতে পারি নিচের উপায় গুলোতে :
একটি গাছ লাগান বা কারো জন্মদিনে গাছ উপহার দিন
প্লাস্টিক বর্জন করুন ও পুনব্যবহারযোগ্য জিনিস ব্যবহার করুন
শিশুদের প্রকৃতির সম্পর্কের শিক্ষা দিন।
স্থানীয় পরিছন্নতা অভিযানে অংশ নেন
সোশ্যাল মিডিয়ার সচেতনতা ছড়ান
বাড়িতে বিদ্যুৎ জল ও কাগজ বাঁচানোর চেষ্টা করুন
প্রাকৃতিক শক্তি (সোলার , wind) ব্যবহার করার কথা ভাবুন।
মা পৃথিবী শুধু একটি গ্রহ নয় আমাদের জীবনের অংশ তার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাকে রক্ষার শপথ নিতে এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তবে শুধু এই দিনটি নয় বছরের প্রতিটি দিন যদি আমরা পরিবেশ বান্ধব ভাবে পাশে থাকি তাহলে এই দিবসের প্রকৃত সার্থকতা হবে। চলুন আমরা সবাই বলি আমি প্রতিদিন পৃথিবীর যত্ন নেব কারণ পৃথিবীকে ভালোবাসা মানে নিজেকে ভালোবাসা।
Well done